top of page

নিউজলেটার| ভলিউম ১৫ | অগাস্ট-অক্টোবর ২০২২

Updated: Dec 6, 2022



Bangla Newsletter Vol 15 August - October 2022
.pdf
Download PDF • 31.98MB

সুশাসন এবং সামাজিক জবাবদিহি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নিলেন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাগণ

জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিক ও সুশীল সমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং অংশগ্রহণের জন্য সক্রিয় পরিবেশ তৈরি করতে সরকার কর্তৃক নাগরিক সমাজ সংস্থার (সিএসও) ভূমিকা স্বীকার এবং সক্রিয়ভাবে তাদের সাথে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি অর্জনে সরকারি কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক নেতৃত্ব অনুশীলন করা এবং সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি, তথ্য অধিকার, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা এবং জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল এর মতো সামাজিক জবাবদিহি উপকরণসমূহের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরী। পিফরডি প্রকল্পের ফলাফল এলাকা ২ এর প্ল্যাটফর্মগুলি সরকারি কর্মকর্তাদেরকে অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ও সামাজিক জবাবদিহি উপকরণসমূহে সংবেদনশীল করার জন্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক নেতৃত্ব প্রদানের তাদের সক্ষমতা তৈরি করতে এবং নিজ নিজ সংস্থায় জবাবদিহি উপকরণসমূহ কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সহায়তা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।


সামাজিক জবাবদিহি উপকরণসমূহকে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য এবং সুশাসন প্রচার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে, আমরা আমাদের প্রকল্পাধীন জেলাগুলোতে পাঁচটি সরাসরি এবং চারটি ভার্চুয়াল আইজিএসএ (ইনক্লুসিভ গভর্নেন্স অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি) ইভেন্টের আয়োজন করেছি। বাস্তবায়নের শেষ বছরে প্রকল্পকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২-এ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ঢাকায় সুশাসন এবং সামাজিক জবাবদিহি বিষয়ক একটি কর্মশালার আয়োজন করেছি। অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি জ্যেষ্ঠ সচিব এবং সচিব উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ৩০ জন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব, উপসচিব, যুগ্ম সচিব এবং সিনিয়র সহকারী সচিব), ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি, পিফরডি প্রকল্পের প্রতিনিধি এবং দুটি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পের প্রতিনিধিরা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।


কর্মশালায় দুটি নির্মাণ প্রকল্পের উদাহরণ সহ সুশাসন এবং সামাজিক জবাবদিহি নীতি সম্পর্কিত মূল ধারণাগুলি তুলে ধরা হয়। বিশেষ অতিথি, মিস সানজিদা সোবহান, এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব - সংস্কার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং পিফরডি-এর পক্ষ থেকে বিশিষ্ট অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের কর্মশালায় স্বাগত জানান।


স্বাগত বক্তব্যে, মিস সোবহান সুশাসনকে এগিয়ে নেওয়া এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অবদান রাখতে এই প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন। পিফরডি প্রকল্পটি "সরবরাহ এবং চাহিদা" পদ্ধতি অবলম্বন করে কাজ করে যেখানে প্রকল্পটি সামাজিক জবাবদিহি উপকরণসমূহের ওপর পরিষেবা প্রদানকারীদের সক্ষমতা উন্নত করতে সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে কাজ করে। অন্যদিকে পিফরডি ২১টি জেলায় সুশীল সমাজের সাথে কাজ করছে যাতে আরও উন্নত পরিষেবার দাবিতে সামাজিক জবাবদিহি উপকরণসমূহ ব্যবহারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পায়৷

বিশেষ অতিথি এবং ইইউডি প্রতিনিধি, মিস্টার মউরিজিও সিয়ান, মিনিস্টার কাউন্সেলর, হেড অফ কোঅপারেশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে বলেন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিক ও সুশীল সমাজের কার্যকর অংশগ্রহণের সুবিধার্থে এবং বাংলাদেশের জবাবদিহি ব্যবস্থা উন্নত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং সুশীল সমাজের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিকল্পিত এই অনন্য প্রকল্পের অংশীদার হতে পেরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গর্বিত। সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নাগরিক ও নাগরিক সমাজের কার্যকর অংশগ্রহণের প্রতি ইইউ-এর সমর্থন ব্যাখ্যা করার সময়, মিঃ সিয়ান বলেন, “একটি দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করার সর্বোত্তম উপায় হিসাবে আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। বৈচিত্র্যময়, বহুত্ববাদী এবং সমালোচক সুশীল সমাজ নিশ্চিত করতে নাগরিকদের কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নীতিনির্ধারক এবং রাজনীতিবিদ ব্যতীত কার্যকর গণতন্ত্র নেই।“


সম্মানিত অতিথি ও কর্মশালার চেয়ারপারসন, জনাব মোঃ শামসুল আরেফিন, সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বিশিষ্ট অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। জনাব আরেফিন বলেন, সামাজিক জবাবদিহির উপকরণগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা জোরদার করতে এবং জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে খুবই কার্যকর। মিসেস আয়েশা আক্তার, যুগ্ম সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং পিফরডি-এর প্রকল্প পরিচালক তারপরে বাংলাদেশে সামাজিক জবাবদিহি উপকরণগুলোর পাশাপাশি সুশাসনকে শক্তিশালী করার জন্য প্রকল্পের উদ্যোগ এবং কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। প্রকল্পের টিম লিডার আর্সেন স্টেপানিয়ান পিফরডি-এর কার্যক্রম এবং উদ্দেশ্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত ধারনা প্রদান করেন।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রতিটি মেগা প্রকল্পের কেস স্টাডি উপস্থাপন এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কীভাবে প্রকল্প দুটি সুশাসন নিশ্চিত করছেন তা তুলে ধরা হয়। আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্বের পর প্রধান অতিথি মাননীয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনাব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সমাপনী বক্তব্য দিয়ে কর্মশালার ইতি টানেন।


ষষ্ঠ সামাজিক মাধ্যম প্রচারণা শুরু

তথ্য অধিকার দিবস ২০২২ কে লক্ষ্য ধরে, পিফরডি অনলাইনে জনসাধারণের কাছে মূল সামাজিক জবাবদিহি উপকরণগুলো প্রচারের জন্য ষষ্ঠ সামাজিক মাধ্যম প্রচারণা শুরু করেছে। আগের প্রচারণার মতো এটি নাগরিকদের চারটি জবাবদিহি উপকরণগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে এবং প্রতিটি উপকরণ কী, কীভাবে, এবং কেন সে সম্পর্কে তথ্য দেবে। সেইসাথে সামাজিক জবাবদিহি উপকরণগুলোর সাথে জড়িত থাকার জন্য নাগরিকদের নাগরিক কর্তব্যের ওপর জোর দেবে। আমাদের প্রচারাভিযানের কাঠামোটি প্রচারাভিযানের সময়কাল জুড়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি টুলকে তুলে ধরেবে। ডিসেম্বরে দুর্নীতিবিরোধী দিবসের পরপরই প্রচারণা শেষ হবে। এবারের প্রচারাভিযান ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৮০ লক্ষ এর বেশি ইউনিক অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে এবং ৩ লক্ষ ৫৮ হাজারের বেশি এগেজমেন্ট নিশ্চিত করেছে।


অনলাইন বিজ্ঞাপন: এসএটি’র এর ওপর গুগল মার্কেটিং

পিফরডি ২০১৯ সাল থেকে প্রকল্পাধীন জেলাগুলোর নাগরিকদের লক্ষ্য করে অনলাইন সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা চালিয়ে আসছে। অনলাইনে আরও বেশি সংখ্যক সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমরা বিজ্ঞাপনের কৌশলগত প্লেসমেন্টের মাধ্যমে সামাজিক জবাবদিহি উপকরণগুলো প্রচারের জন্য গুগল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। প্রচারাভিযান (যা ৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল এবং ১৮ নভেম্বর ২০২২-এ শেষ হবে) ইতিমধ্যেই ৩ কোটি দর্শনযোগ্য ইমপ্রেশন (শ্রোতারা বিজ্ঞাপনগুলি কতবার দেখে) এর মূল লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। প্রচারাভিযানটি পিফরডি প্রকল্পের ২১ টি জেলায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন বয়সের শ্রোতা এবং তাদের আগ্রহ যেমন নীতি প্রণয়ন, সরকারী পরিষেবা, সামাজিক সক্রিয়তা, সুশাসন এবং নাগরিক সমাজের স্বার্থের সাথে প্রচারণাকে সঙ্গতিপূর্ণ করতে প্রাসঙ্গিক অ্যাফিনিটি ফিল্টার ব্যাবহার করা হয়েছে।


মূল এসএটি গুলোরর সাথে সম্পর্কিত প্রচারাভিযানের বিষয়বস্তু চারটি অংশে বিভক্ত। এ সংক্রান্ত স্ট্যাটিক গ্রাফিক্স এবং ভিডিও সফলভাবে আমাদের দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে। ব্যবহারকারীরা যখন বিষয়বস্তুতে ক্লিক করেন তখন তাদের ল্যান্ডিং ওয়েব পেজে পুনঃনির্দেশিত করা হয় যা বিশেষভাবে এসএটি’র গ্রাফিক্স, ভিডিও এবং পাঠযোগ্য উপকরণসহ প্রচারণার প্রতিটি ভাগের জন্য তৈরি করা। আমাদের ওয়েবসাইটের মেট্রিক্সের উপর ভিত্তি করে আমরা দেখেছি পাচ্ছি যে ব্যবহারকারীদের সেশনগুলো গুগল বিপণন প্রচারাভিযান শুরুর আগের অবস্থার তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে এবং বাউন্স রেট (একটি নির্দিষ্ট সময়ের নীচে যে হারে ব্যবহারকারীরা সাইট ছেড়ে চলে যায়) অবিশ্বাস্যভাবে কম- গড় ১০% এর নিচে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে দর্শকরা নীতি উপকরণগুলো সম্পর্কে সত্যিকারের কৌতূহলী এবং উপকরণগুলো বুঝতে এবং বাস্তব ব্যবহার সম্পর্কে আরও জানতে তারা আমাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করছেন৷


যদিও আমাদের এন্ডলাইন সমীক্ষায় প্রচারণার বেশিরভাগ প্রভাব উঠে আসবেনা, আমরা উত্তরদাতাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি যে তারা আমাদের সামগ্রী অনলাইনে দেখেছে। আমরা আশা করছি প্রকল্পাধীন ২১ টি জেলার জনসাধারনের কাছে পৌঁছানোর প্রচেষ্টাটি এই ধারণাটিকে আরও দৃঢ় করবে যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাগরিকদেরও সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে এবং সরকারের সকল স্তরে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য তাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


সিএসও স্টোরিবুক প্রকাশনা

২০১৯ সাল থেকে পিফরডি গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সমস্যা সমাধানের জন্য ৬৩ টি অংশীদারি সিএসও-কে তাদের কমিউনিটিতে সামাজিক অ্যাকশন প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে। এই সময়ের মধ্যে আমরা কেবল তাদের অ্যাডভকেসি প্রচেষ্টা গড়ে তুলতে সাহায্য করিনি বরং আমরা নিশ্চিত করেছি যে তারা পরিবর্তনগুলি বাস্তবায়নে কাজ চালিয়ে যেতে পারে যা প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে তাদের কমিউনিটিকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে। তাদের কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টা তুলে ধরার জন্য আমরা প্রতিটি অংশীদারি সিএসও-এর কাছ থেকে তাদের কার্যক্রমের গল্প সংগ্রহ করেছি। এই প্রকাশনায় আমাদের অংশীদার সিএসও-দের অভিজ্ঞতা এবং তাদের কার্যক্রমের প্রভাবগুলো ছবিসহ বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা আশা করি যে এই প্রকাশনাটি একটি অনুস্মারক হিসাবে কাজ করবে এবং প্রমাণ করবে যে আমাদের অংশীদারি সিএসও-এর মতো তৃণমূল সংস্থাগুলি পিছিয়ে পড়া কমিউনিটিগুলোকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করতে পারে। প্রকৃত কপি আমাদের অংশীদারদের মাধ্যমে পাওয়া যাবে এবং ডিজিটাল অনুলিপি আমাদের ওয়েবসাইটে p4dbd.org থেকে ডাউনলোড করা যাবে।


তথ্য অধিকার দিবস ২০২২ উদযাপন


তথ্যের অবাধ প্রবাহ কার্যকরী গণতন্ত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জনগণের তথ্যের অধিকার সুশাসনের ভিত্তি স্থাপন করে যেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন। এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয় এবং জনগণ ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক তৈরি হয়। তথ্য অধিকার দিবস, যা তথ্যে সার্বজনীন অভিগম্যতার জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসাবেও পরিচিত। গণতান্ত্রিক চর্চাকে উৎসাহিত করতে প্রতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর এই সত্যটি উদযাপন করা হয়।


এই বছর, বাংলাদেশ "তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক" থিমকে কেন্দ্র করে দিবসটি উদযাপন করা হয়। প্রতি বছরের মতো পিফরডি এবং এর অংশীদারি সংস্থা ও ফোরামগুলি এই দিনটি তাৎপর্যের সাথে উদযাপন করেছে৷


ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরাম দিনটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, র‌্যালি, অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা, তথ্য অধিকারের ওপর নাটক প্রদর্শন এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এই আয়োজনসমূহে ১২ টি জেলার জেলা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ মোট ৭০০ জন অংশগ্রহণকারী যার মধ্যে ২৪৭ জন নারী অংশনিয়েছেন। অংশগ্রহণকারীরা সুশাসন সুসংহত করণে তথ্যের তাৎপর্য এবং শাসন ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন কীভাবে সরকারি সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে তা নিয়ে আলোচনা করেন।


এন্ডলাইন সমীক্ষার তথ্য সংগ্রহ সম্পন্ন


২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, প্রকল্পের লগফ্রেম সূচকের বিপরীতে প্রকল্পের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার জন্য পিফরডির উদ্যোগে, নেলসন বাংলাদেশ নামক সংস্থার সহায়তায় একটি এন্ডলাইন সমীক্ষা করা হয়েছে। লগফ্রেমে প্রকল্পের কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর মনোভাব, সচেতনতা এবং আচরণ পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সূচক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সূচকগুলির পরিবর্তন সঠিকভাবে মূল্যায়নের লক্ষ্যে, পিফরডি ২০১৮ সালে একটি বেজলাইন সমীক্ষা এবং ২০২০ সালে একটি টেলিফোন-ভিত্তিক মিডলাইন সমীক্ষা পরিচালনা করে৷ এখন, বেজলাইন সমীক্ষার সাথে মিল রেখে এন্ডলাইন সমীক্ষার তথ্য মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং প্রকল্পের হস্তক্ষেপের ফলে সৃষ্ট পরিবর্তনগুলি চিহ্নিত করার কাজ চলছে।


এন্ডলাইন সমীক্ষার তথ্য সংগ্রহে মিশ্র পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। পরিমাণগত কৌশল ব্যবহার করে প্রকল্পাধীন ২১ টি জেলায় ১২৬০ টি পরিবারের (খানা) মধ্যে ট্যাব-ভিত্তিক কম্পিউটার-সহায়ক কর্মী সাক্ষাৎকার (CAPI) টুল ব্যবহার করে প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ওপর প্রকল্পের প্রভাব যাচাই করেছে। মোট ২০ জন ফিল্ড ইনভেস্টিগেটর ১৫ দিনের মধ্যে খানা জরিপ সম্পন্ন করেছে। অপরদিকে, চারজন গবেষণা সহযোগী গুণগত কৌশল ব্যবহার করে ফোকাস গ্রুপ পরিচালনা করেছেন যা সরাসরি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে প্রকল্পের প্রভাবের ওপর বিস্তারিত তথ্য নিয়ে এসেছে। জরিপ সংস্থা এবং পিফরডি টিম যৌথভাবে অনলাইন উপাত্ত মনিটরিং এবং শারীরিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কোভিড-১৯ সুরক্ষা ব্যবস্থা, নৈতিক বিবেচনা এবং মান নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করেছে।


এন্ডলাইন সমীক্ষার প্রাথমিক বিশ্লেষণে কমিউনিটির ওপর প্রকল্প কার্যক্রমের ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। ফোকাস গ্রুপের অনেক অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন যে পিফরডি-এর উদ্যোগগুলি কমিউনিটির জন্য ফলপ্রসূ হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা আরও জানিয়েছেন যে প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও তারা পিফরডি প্রদত্ত শিখন ও উপকরণ ব্যবহার করে তাদের কমিউনিটির উন্নয়ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি ডিসেম্বর ২০২২ এ প্রকাশিত হবে যা সমীক্ষার একটি বিস্তারিত চিত্র প্রকাশ করবে।


সাফল্যের গল্প

ফেনীতে এমএপি সদস্যরা রাস্তাঘাট পরিষ্কার এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলিতে অভিগম্যতা উন্নত করতে কাজ করছেন


ফেনীতে কমিউনিটি ক্লিনিকে মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে এমএপি সদস্যরা সামাজিক অ্যাকশন প্রকল্প পরিচালনা করেছে

ফেনীর পূর্ব চন্দ্রপুর থেকে আমাদের এমএপি সদস্যরা স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলিতে মানসম্পন্ন সেবা এবং সেবার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে চলেছেন। তারা নিজেদের উদ্যোগে মাসিক চাঁদার ভিত্তিতে একটি তহবিল গঠন করে যেখানে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এছাড়াও, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মোট ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা অনুদানের জন্য আবেদন করে। তহবিল থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে তারা একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের রাস্তার প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যেন কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা গ্রহীতারা স্বাচ্ছ্যন্দে ক্লিনিক থেকে দ্রুত সেবা গ্রহণ করতে পারে।


স্থানীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতির জন্য সামাজিক অ্যাকশন প্রকল্প পরিচালনা করে জয়লশকরের এমএপি সদস্যরা

ফেনীর জয়লশকরে আমাদের এমএপি স্থানীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য একটি সামাজিক অ্যাকশন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। তারা স্থানীয় জনগণকে দক্ষ এবং টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কৌশল সম্পর্কে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করে। তারা প্রতি দুই সাপ্তাহ অন্তর পরিচ্ছন্নতার কর্মসূচী হাতে নিয়েছে যেখানে কমিউনিটির সদস্যদের সম্মিলিতভাবে তাদের বাড়ির আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকে । দাগনভুইনিয়ার ইউএনও এ্মএপি স্বেচ্ছাসেবকদের একটি পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর জায়লশকরের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।


একটি উন্নত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে: ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিপিএফ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ছাত্রদের একত্রিত করেছে


ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিপিএফ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ছাত্রদের একত্রিত করেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্কুলছাত্রীরা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শপথ নিতে শুরু করেছে । আমাদের ভবিষ্যত নেতা হিসেবে এই সামাজিক ব্যাধি বিষয়ে তাদের উপলব্ধি এবং অল্প বয়স থেকেই পদক্ষেপ নিতে তাদের স্বদিচ্ছা সবার জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।


দুটি স্বনামধন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিপিএফ-এর শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন স্থানীয় এবং জাতীয় মিডিয়াতে প্রচার হলে বিষয়টি জেলায় সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে।

বাল্যবিবাহ একটি গুরুতর সমস্যা। সামাজিক বাস্তবতার কারণে বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম উভয়ই আয়োজন করা কঠিন। এরপরও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিপিএফ সৃষ্টিশীল পদ্ধতিতে সাবেরা সোবাহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।


সাবেরা সোবাহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। ডিপিএফ সভাপতি মোহাম্মদ আরজু মিয়া এবং সহ-সভাপতি তাপসী রায় বাল্যবিবাহের নেতিবাচক প্রভাব এবং অল্প বয়স থেকে বাল্যবিবাহের ক্ষতি সম্পর্কে কীভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায় সে সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন পিফরডি ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর খোদেজা বেগম, মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান, সহকারী প্রধান শিক্ষক; মোহাম্মদ আবদুর রহিম, এবং শফিকুর রহমান, স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক এবং এসএম শাহীন, তাহের উদ্দিন, এবং মোহাম্মদ আশিকুর রহমান ভুঁইয়া সহ ডিপিএফ সদস্যবৃন্দ।


ডিপিএফ সভাপতি বলেন, তারা প্রতি মাসে স্থানীয় স্কুলে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।


৩টি জেলায় সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি পাইলটিং


পিফরডি কিশোরগঞ্জ, নাটোর ও বান্দরবান জেলায় ‘আদর্শ’ সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি চালু করার পরিকল্পনা করছে। এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হল সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি আদর্শায়ন করা যা সমস্ত সরকারি বিভাগ অনুসরণ করবে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা কর্তৃপক্ষকে এ কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। নির্বাচিত জেলাগুলির সমস্ত বিভাগের ফোকাল ব্যক্তিদের জন্য প্রশিক্ষণ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হবে, তারপরে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির দ্বারা সম্মত আদর্শ সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি তৈরি করা হবে।


প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আপডেট

  • বিসিএসএএ- বিসিএসএএ ২০০০ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি এর মধ্যে চুক্তি মোতাবেক তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে এবং কিছু নির্বাচিত অংশগ্রহণকারীদের সাথে একটি সমাপনী প্রতিফলন কর্মশালার আয়োজন করেছে। কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে কার্যক্রম শেষ করতে পরিকল্পনার থেকে বেশি সময় লেগেছে। অতিমারির সময়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনলাইন-অফলাইন মিশ্র পদ্ধতি অবলম্বন করেছে বিসিএসএএ। পরিকল্পিত সরাসরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে অনলাইন প্রশিক্ষণে রূপান্তরিত করতে কিছু সময় লেগেছে। এই সময়কালে, বিসিএসএএ জাতীয় ও স্থানীয় প্রশাসন থেকে ৪০৪ জন সরকারি কর্মকর্তাকে (পুরুষ ২৯১ এবং নারী ১১৩) প্রশিক্ষণ দিয়েছে। মন্ত্রণালয়/জাতীয় পর্যায়ের ২৩৫ জনপ্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেন যেখানে স্থানীয় প্রশাসন থেকে ১৬৯ জন অংশগ্রহণকারী ছিলেন। প্রতিফলন কর্মশালায় প্রায় সকল অংশগ্রহণকারীই বলেন যে প্রতিদিনের কাজের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক এই প্রশিক্ষণ এবং এর ফলো-আপ প্রশিক্ষণ হলে আরও ফলপ্রসূ হবে। কিছু অংশগ্রহণকারী পরামর্শ দিয়েছেন যে বিভিন্ন সুবিধা এবং ব্যবস্থাপনা কৌশলগুলির উপর বিস্তৃত প্রশিক্ষণ তাদের কাজকে আরও ভালভাবে সম্পাদন করতে সহায়তা করবে।

  • বিপিএটিসি- আগস্ট থেকে অক্টোবরের সময়কালে বিপিএটিসি সরকারি অফিসগুলির দ্বারা সামাজিক জবাবদিহির উপকরণসমূহ বাস্তবায়নের কার্যকারিতা পরিমাপ করার জন্য পরিকল্পিত গবেষণা চালায়। এই ফলো-আপ গবেষণাটি পিফরডি-এর সহায়তায় বিপিএটিসি সম্পন্ন করেছে। পূর্বের গবেষণাটি এনআইএস, আরটিআই, এপিএ, সিসি, জিআরএস এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এবং জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পাবলিক সেক্টর অফিসে এর প্রয়োগের মূল্যায়নের ওপর ছিল।

কৌশলগত যোগাযোগের উপর কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে এনআইএমসি


এনআইএমসি এবং পিফরডি তাদের সহযোগিতার তৃতীয় ধাপ শুরু করতে সম্মত হয়েছে যা জাতীয় পর্যায়ে ফোকাস করবে। পিফরডি টিম লিডার মিঃ আর্সেন স্টেপানিয়ান, কমিউনিকেশন লিড মিস সারাহ লুইস, প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব সিয়ামুল রাব্বানী, এবং স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান ১৬ অক্টোবর এনআইএমসি-এর মহাপরিচালক মিসেস শাহিন ইসলাম, এনডিসি এবং তার দলের সাথে এ বিষয়ে সাক্ষাৎ করতে এনআইএমসি পরিদর্শন করেন।


এই পর্বে প্রধান কাজ হবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়কে সাথে নিয়ে সামাজিক জবাবদিহি উপকরণসমূহ প্রচারের জন্য কৌশলগত যোগাযোগ পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করা। পিফরডি এবং যুক্তরাজ্যের গভর্নমেন্ট কমিউনিকেশন সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনাল (জিসিএসআই) এর মাধ্যমে দেয়া সক্ষমতা বৃদ্ধি সহায়তার প্রধান ফলাফল হবে এই কৌশলগত যোগাযোগ পরিকল্পনা।


এছাড়াও জাতীয় স্তরের সাংবাদিক, সম্প্রচারকারী, অনলাইন-ভিত্তিক নির্মাতা এবং স্ক্রিপ্ট লেখকদের সামাজিক জবাবদিহিতা ও কৌশলগত যোগাযোগের ওপর প্রশিক্ষন দেবে এনআইএমসি। প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম থেকে নির্বাচিত সেরা স্ক্রিপ্টগুলি ব্যবহার করে ৪ টি টেলিভিশন এবং ৪ টি রেডিও পিএসএ তৈরি করে ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রচারণা চালাবে এনআইএমসি।


জিআরএস: অপারেশনালাইজেশন এবং থার্ড পার্টি মনিটরিং

অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য অপারেশনাল সহায়তা এবং জিআরএস-এর ৩য় পক্ষের মনিটরিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


অনেক মাস প্রচেষ্টার পর, Quay Asia – ISTL যৌথ উদ্যোগকে জিআরএস -এর অপারেশনাল রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তা প্রদানের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল এবং তারা আগস্ট ২০২২ থেকে পিফরডি এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এর সাথে কাজ করছে।


পার্টিসিপেটরি ম্যানেজমেন্ট ইনিশিয়েটিভ ফর ডেভেলপমেন্ট (পিএমআইডি) এর সহায়তায় তৃতীয় পক্ষের মনিটরিংও শুরু হয়েছে যারা সিটিজেনস চার্টার, জিআরএস, আরটিআই এবং এনআইএস-এর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জন্য মনিটরিং টুল তৈরি করছে। যুগ্ম সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং পিফরডি প্রকল্প পরিচালক মিসেস আয়েশা আক্তার এবং উপসচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও পিফরডি উপ প্রকল্প পরিচালক মোঃ মোখলেসুর রহমানের সাথে একাধিক পরামর্শের প্রেক্ষিতে পিএমআইডি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই পরামর্শের পর কাজের পরিধি কিছুটা বেড়েছে, যা প্রারম্ভিক প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়েছে। বর্তমানে, পিএমআইডি একটি খসড়া প্রশ্নপত্র জমা দিয়েছে, যা বর্তমানে পর্যালোচনাধীন।


জাতীয় সংলাপের জন্য প্রস্তুতিমূলক কর্মশালা


পিফরডি ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে ব্র্যাক সিডিএম, সাভারে জাতীয় সংলাপের জন্য একটি প্রস্তুতিমূলক কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল বাল্যবিবাহ, মানসম্মত শিক্ষা, এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের খসড়া পজিশন পেপার নিয়ে আলোচনা করা এবং অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে মতামত ও পরামর্শ নেওয়া।


অংশগ্রহণকারীরা প্রতিটি জাতীয় সংলাপের সম্ভাব্য তারিখ, স্থান এবং অতিথি তালিকা নিয়েও আলোচনা করেছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মোঃ শামসুল আরেফিন এবং সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও পিফরডি প্রকল্পের পরিচালক যুগ্মসচিব মিসেস আয়েশা আক্তার। মোঃ মোখলেসুর রহমান, ডেপুটি সেক্রেটারি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং পিফরডি প্রকল্পের উপ পরিচালক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিফরডি প্রকল্পের টিম লিডার আর্সেন স্টেপানিয়ান।


ওয়ার্কিং সেশন চলাকালীন ন্যাশনাল থিমাটিক ফোরামের (এনটিএফ) কোর গ্রুপের সদস্যবৃন্দ বিআইডিএস-এর গবেষকদের সাথে তিনটি গ্রুপে (বাল্যবিবাহ, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা) নিজ নিজ পজিশন পেপারের খসড়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। মোট, ১৪২ জন এনটিএফ কোর গ্রুপের সদস্য এই কর্মশালায় যোগ দেন, যার মধ্যে ৪৮ জনই নারী।


থিম্যাটিক ফোরামের বিষয়গুলি পজিশন পেপার চূড়ান্ত করা হয়েছে

ন্যাশনাল থিম্যাটিক ফোরামের প্রস্তুতির জন্য আমাদের প্রকল্পের জেলাগুলি থেকে তিনটি বিষয়ে (কমিউনিটি ক্লিনিক, শিক্ষার মান, বাল্যবিবাহ) গবেষণা পরিচালনা করতে এবং তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এর সাথে কাজ করেছি। পজিশন পেপারগুলো মূল সমস্যার রূপরেখা, সমস্যার কারণগুলি এবং প্রতিটি সমস্যার সমাধানের সম্ভাব্য সমাধানগুলি নিয়ে কথা বলবে। যদিও কমিউনিটির সদস্যদের ধারণা এবং অভিজ্ঞতা থেকে চিহ্নিত করা সমস্যাগুলো কমিউনিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ, এটি জাতীয় স্তরের নীতিনির্ধারকদের নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে এই সমস্যাগুলিকে দেখতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। আমরা নিশ্চিত যে এই গবেষণাপত্রে দেওয়া তথ্য এবং জাতীয় সংলাপগুলোতে সুশীল সমাজ সদস্যদের অভিজ্ঞতা জানার মাধ্যমে নীতিনির্ধারকরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করার সময় সাধারণ সমস্যাগুলিকে মোকাবেলা করতে পারবেন।


বাল্যবিবাহ নিয়ে জাতীয় সংলাপ


দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় পিফরডি তৃণমূল, জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ে সুশীল সমাজ এবং সরকারের মধ্যে সংলাপের একটি জায়গা তৈরি করেছে যাতে নাগরিক এবং সুশীল সমাজ তাদের মতামত তুলে ধরতে পারে এবং সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে। তৃণমূল এবং জেলা পর্যায়ে সংলাপ অনুষ্ঠানের সফল সমাপ্তির পর, পিফরডি জাতীয় থিম্যাটিক ফোরাম গঠন করে এবং বাল্যবিবাহের ওপর প্রথম জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে। ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে হোটেল র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত এই সংলাপে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, প্রকল্পাধীন ১২ টি জেলার নাগরিক সমাজের সদস্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতিনিধিবৃন্দ একত্রিত হয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মোঃ শামসুল আরেফিন এবং সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংস্কার শাখার অতিরিক্ত সচিব মিসেস সানজিদা সোবহান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধিদলের গভর্ন্যান্স টিম লিডার মিসেস আমাইয়া জাবালা। সংলাপটি পরিচালনা করেন পিফরডি-এর প্রকল্প পরিচালক মিসেস আয়েশা আক্তার, যুগ্ম সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং উপ প্রকল্প পরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমান, উপসচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মিসেস নার্গিস খানম বাল্যবিবাহ বন্ধে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এ. ই. মো. মহিউদ্দিন ওসমানী সংলাপের সামগ্রিক বিষয়ে তার বক্তব্য তুলে ধরেন।

এনটিএফ-এর পক্ষে বিআইডিএস-এর গবেষকরা বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ এবং এর সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলির ওপর একটি পজিশন পেপার উপস্থাপন করেন। পজিশন পেপারে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের কারণ ও পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কিছু সম্ভাব্য ও বাস্তব সমাধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরামর্শের মধ্যে রয়েছে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি সক্রিয় করা, অংশীজনদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় জোরদারের জন্য কৌশল প্রণয়ন, আইন ও প্রবিধান সংশোধন এবং যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, কমিউনিটি পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি করা, মেয়েদের জন্য দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ প্রদান এবং স্কুলে মেয়েশিশুর উপস্থিতি নিশ্চিত করা। এছাড়াও পরামর্শের মধ্যে আছে বন্ধুত্বপূর্ণ, অল্পবয়সী নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা এবং মেয়েদের জন্য জীবনমুখী দক্ষতা কর্মসূচি বৃদ্ধি করা, বাল্যবিবাহ কমাতে সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা এবং স্থানীয় প্রহরী হিসেবে সিএসও-কে সম্পৃক্ত করা।


মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সদস্য ছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত এনটিএফ-এর কোর গ্রুপের সদস্য, আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জাতীয় পর্যায়ের এনজিওর প্রতিনিধি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং পিফরডি-এর প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে সশরীরে অংশগ্রহণ করেছে মোট ১২৯ জন, যাদের মধ্যে ৪৩ জন নারী। এছাড়া ২১ টি জেলা থেকে অনলাইনে যোগদান করেছে এনটিএফ জেনারেল গ্রুপের ৭৮ জন নারী সদস্য সহ মোট ২১৬ জন।

এই প্রকাশনাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় তৈরি। প্রকাশনার বিষয়বস্তুর দায়িত্ব

প্ল্যাটফর্মস ফর ডায়ালগ প্রকল্পের। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতামতকে প্রতিফলিত নাও করতে পারে।

64 views0 comments
bottom of page